প্রকাশিত: Sun, Jul 9, 2023 3:09 PM আপডেট: Tue, Jun 24, 2025 7:36 AM
সম্ভাবনাময় ‘পন্থি-সাংবাদিকতা’!
নিয়ন মতিয়ুল : অনেকদিন আগে একটা গল্প শুনেছিলাম। অনেকটা এরকম, একবার এক লোককে ধরে বেধে পাবনায় মানসিক হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলেন তার স্বজনরা। লোকটি বারবার চিৎকার করে বলছিলো, ‘আমাকে কি পাগল পাইছো তোমরা? বেধে নিয়ে যাচ্ছ’? স্বজনরা লোকটিকে নিয়ে শেষ অবধি হাসপাতালের গেটে পৌঁছালেন। ঠিক তখন ভেতর থেকে হঠাৎ একদল পাগল দৌড়ে এসে গেটের ওপাশ থেকে চিৎকার করতে লাগলেন, ‘আরে, তোমরা ওকে এখানে এনেছ কেন? ও তো পাগল! হি হি হি...’।
এই সময়ের সাংবাদিকতা নিয়ে ভাবতে গেলে এই গল্পটা বেশি মনে পড়ে। কারণ বর্তমানে দেশে সাংবাদিকতার চেয়েও বড় পরিচয় হচ্ছে আপনি কোন রাজনৈতিক দলের অনুসারি বা পন্থি। ‘পন্থি-সাংবাদিকরা’ আপনাকে যেকোনোভাবে স্বদলীয় বা বিরোধীদলীয় হিসেবে চিহ্নিত করবেই। পক্ষে লিখলে বা বললে আপনি স্বদলীয়পন্থি আর বিপক্ষে গেলেই বিরোধীদলীয় পন্থি। এর বাইরে কেউ যদি নির্মোহ বা নিরপেক্ষভাবে লেখেন বা বলেন, তাহলে পন্থিরা দৌড়ে গেটের কাছে এসে সেই পাগলদের মতোই বলে বসবে, -আরে আপনি তো পাগল! সাংবাদিকতায় কেন?...হা হা হা। তবে বিস্ময়কর হলেও সত্য, ‘পন্থি-সাংবাদিকতা’ আজ অপার সম্ভাবনায় দাঁড়িয়ে। অর্থ, বিত্ত, ক্ষমতা- কী চান? সবই মিলছে এতে।
‘এক পাগল ছাড়া তো জগতে কেউ নিরপেক্ষ নয়। আর মানুষ মাত্রই রাজনৈতিক জীব’। তাই ‘পন্থি-সাংবাদিকতা’ এখানে অনিবার্য। ভাবতে পারেন, শুধু পন্থির কারণেই এক সময়ের মাছ, সবজি বিক্রেতা, ঠিকাদাররাও এখন ‘বড়’ সাংবাদিক, জনপ্রিয় নেতা। হাত বাড়ালেই পান কাড়ি কাড়ি টাকা! সাধারণ থেকে কিংবদন্তী সাংবাদিক পর্যন্ত এখন পন্থি হিসেবে নিবেদিতপ্রাণ। দেশের ছোটবড়, প্রান্তিক থেকে অভিজাত, যত সাংবাদিক সংগঠন আছে সবই পন্থিবাদে বিভাজিত। বিশেষ সুবিধাবাদে তারা বিশেষপন্থি থেকে প্রয়োজনে চরমপন্থি হতেও প্রস্তুত। না, এই পন্থিসুবিধা পেতে আপনার প্রাণপ্রিয় দলকে যে ক্ষমতায় থাকতেই হবে, এমনটা নয়, ক্ষমতার বাইরেও রয়েছে নগদ পাওনার বিশেষ ব্যবস্থা।
অবশ্য এক্ষেত্রে চরম বিপদে আছেন ‘বোকা সাংবাদিকরা’। যারা নিজেদের নীতিবান, সৎ, সাহসী ভাবেন: রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে, ভয় না পেয়ে, ভালো-সাহসী সাংবাদিকতা করতে চান, অকপটে কঠিন সত্য প্রকাশ করতে চান। আর এসব বোকাকে নিয়েই ‘পন্থি-সাংবাদিকদের’ বড় ভয়। কারণ তাদের জন্যই ‘পন্থিদের’ গোটা ইকোসিস্টেম (অর্থব্যবস্থা) ভেঙে পড়তে পারে। তাই তারা বোকাদের যেকোনো উপায়ে পন্থিভুক্ত করতে মরিয়া। তাদের সাফ কথা, হয় পক্ষে থাকো, নয় তো বিপক্ষে। আর যদি নিরপেক্ষ, নির্মোহ তথা পাগল হও, তাহলে ঘরে ফিরে যাও। ছবি: ‘সাউথ চায়না মনিং পোস্টে’ প্রকাশিত একটি ব্যঙ্গচিত্র. (রাজনৈতিক গণমাধ্যম: ৮ জুলাই, ২০২৩। এলিফেন্ট রোড, ঢাকা). লেখক: সাংবাদিক
আরও সংবাদ
চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে
‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!
কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!
সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি
ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
মতিউর প্রতিদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৮৩ ব্যাচের বন্ধুদের গ্রুপে সৎ জীবন যাপনের উপদেশ দিতেন!

চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে

‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!

কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!

সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি

ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
